হুগলির গুড়াপে ভোরের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য

হুগলী: হুগলীর গুড়াপ থানার অন্তর্গত দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা। উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর থেকে গঙ্গাসাগর অভিমুখী পূণ্যার্থী বোঝাই একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে একটি লরির পিছনে। বুধবার ভোর চারটের সময় ঘটে এই দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান এক পূণ্যার্থী। মৃতের নাম রামদেব মিশ্র (৪৫), বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলায়। আহত হন কমপক্ষে ১৯ জন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টানা দীর্ঘ সময় বাস চালানোর ফলে ক্লান্ত হয়ে চালকের চোখ লেগে যায়। সেই কারণেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি লরির পিছনে ধাক্কা মারে। খবর পেয়ে গুড়াপ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে। চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁদের দ্রুত বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসে মোট ১১৫ জন পূণ্যার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে আরেকটি বাসও চলছিল, তবে সেটি অক্ষত রয়েছে। ৯ই সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশ থেকে দুটি বাসে করে পূণ্যার্থীরা চারধাম যাত্রার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাম মন্দির দর্শনের পর তাঁদের নিজ গ্রামে ফেরার কথা ছিল।
ঘটনার পর দুর্ঘটনাগ্রস্ত যাত্রীদের গুড়াপ থানার কাছে একটি কমিউনিটি হলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকল্প বাস না আসা পর্যন্ত তাঁদের খাবার-পানীয় এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পুলিশ-প্রশাসন। গুড়াপ থানা এবং পলাশী সরকারি হাসপাতালের একটি মেডিক্যাল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে হুগলী গ্রামীণ জেলা পুলিশের পদস্থ অফিসাররা সরেজমিনে তদন্ত করেন। এদিনই ধনিয়াখালীর বিধায়ক অসীমা পাত্র ঘটনাস্থলে গিয়ে পূণ্যার্থীদের খোঁজখবর নেন এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের উত্তরপ্রদেশে ফেরার ব্যবস্থা করেন।
এদিকে, আজ দুপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে একটি ধাবা থেকে ঘাতক বাসের চালককে গ্রেফতার করেছে গুড়াপ থানার পুলিশ। আগামীকাল তাঁকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হবে। হুগলী গ্রামীণ জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার কামনাশিশ সেন গুড়াপ থানাকে সমস্ত আহতদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।