কলকাতাদেশরাজ্য

ফিরে এলো আবার দুয়ারে সরকার, শিবিরে মিলবে ৩৭টি প্রকল্পের সুবিধা

সৈকত দাস, হাওড়া:  ২৪ জানুয়ারি, শুক্রবার থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে নবম তম দুয়ারে সরকার শিবির। প্রায় এক বছর পর রাজ্যে শুরু হলো এই কর্মসূচি। চলবে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প চালিয়ে মোট ৩৭টি প্রকল্পের সুবিধার জন্য আবেদন জমা নেওয়া হবে। গোটা রাজ্য জুড়ে ব্লকে ব্লকে এই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।  নবম তম দুয়ারে সরকার শিবিরে জুড়ল স্পেশাল একটি স্কিমও। স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বার্ধক্যভাতা, কৃষকবন্ধু, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড, ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড, মানবিক, রূপশ্রী-র মতো প্রকল্প বা ভাতা-র সুবিধা পেতে এই ক্যাম্পে আবেদন করা যাবে।

প্রতিটি জেলার মতো দুয়ারে সরকারের নবম সংস্করণ আজ হাওড়া জেলার অধীনে ১৭টি ইউনিটে শুরু হয়েছে , তার মধ্যে ১৪টি ব্লক, ১টি কর্পোরেশন এবং ২টি পৌরসভা।

হাওড়া জেলায় মোট ৫১৪৫টি ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মধ্যে (প্রচলিত ক্যাম্পের সংখ্যা ৩৮১২ এবং মোবাইল ক্যাম্পের সংখ্যা ১৩৩৩ ) এখন পর্যন্ত দুয়ারে সরকার ও পারাই সমাধানের নবম সংস্করণে নির্ধারিত হয়েছে।

উদ্বোধনীর দিনে হাওড়া জেলায় মোট ৬৯৬টি ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে, যার মধ্যে (প্রচলিত ক্যাম্পের ৫০৩ টি এবং ১৯৩টি মোবাইল ক্যাম্প)।

প্রথম দিনের কর্মসূচি শুরুর দিন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, হাওড়া, পুলিশ কমিশনার, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, মহকুমা আধিকারিক, জেলা স্তরের সিনিয়র অফিসার এবং ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকরা ক্যাম্পগুলি পরিদর্শন ও নিরীক্ষণ করেছেন এবং সুবিধাভোগীদের সাথে কথা বলেছেন।

প্রথম দিনের কর্মসূচি অর্থাৎ ২৪শে জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে হাওড়া জেলায় রেকর্ড করা মানুষ দেখতে পাওয়া যায় যার সংখ্যা ছিল ২০৯০০ (দুপুর ৩টা পর্যন্ত)

যার মধ্যে সাধারণ মানুষ লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন -(৭৭৯৬.০ জন) ,বার্ধক্য পেনশন –

(৫৪৯৪ জন) ,স্বাস্থ্য সাথী – (৩১২৭ জন ) বিনা মুল্য সামাজিক সুরক্ষা যোজনার জন্য -(২৮২৯ জন)।

এই দিনে উত্তর হাওড়ার জটাধারী পার্কের দুয়ারে সরকার শিবিরে পরিদর্শন করেন মাননীয় প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, মাননীয়া জেলা শাসক ডঃ পি দিপাপ প্রিয়া, পুলিশ কমিশনার শ্রী প্রবিন ত্রিপাঠী, উত্তর হাওড়ার বিধায়ক শ্রী গৌতম চৌধুরী, সহ আরো অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিক গন। এর পর বালি জগাছা ব্লকে পরিদর্শন করেন ।

২০২৩ সালের ১৫ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়োজিত হয়েছিল অষ্টম দুয়ারে সরকার। সেখানে ৩৬টি প্রকল্পের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, এ বার সেগুলির সঙ্গেই যোগ হচ্ছে ‘কৃষি যন্ত্রাংশ কেনার আর্থিক সাহায্য’ সংক্রান্ত প্রকল্প।

ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় এই ক্যাম্প হবে । এবারে সমস্ত নিয়ম মেনে এই প্রকল্পের আবেদন করতে হবে এমনতাই জানা গিয়েছে। যাঁদের আবেদন গ্রাহ্য হবে না, তাঁদের আবেদন বাতিল হওয়ার কারণ এবং কী করণীয়, তা ঠিক মতো বুঝিয়ে দিতে হবে বলেও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গিয়েছে,  ২৪ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই ক্যাম্প এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব আবেদন খতিয়ে দেখতে হবে। এই সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কেউ অন্য কোনও অজুহাতে টাকা চাইলে রাজ্য একেবারেই বরদাস্ত করবে না। এই কথা SOP-তেই (Standard Operating Procedure) বলে দেওয়া হয়েছে।

সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টে অবধি চলবে এই ক্যাম্প।
জানা গিয়েছে, ‘কৃষির যন্ত্রাংশ কেনার আর্থিক সাহায্য’ প্রকল্পে আবেদন করার সুবিধে মিলবে দুয়ারে সরকারে। কী এই প্রকল্প? রাজ্যের কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, হস্তচালিত ছোট যন্ত্র থেকে বিদ্যুৎচালিত মেশিন সবেতেই এই প্রকল্পে মিলবে ভর্তুকি। উপকৃত হবেন কৃষক থেকে শুরু করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরাও। ৫০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক সহযোগিতা ভর্তুকি হিসেবে দেবে কৃষি দপ্তর। শক্তি চালিত যন্ত্রের ক্ষেত্রে ৫০-৬০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়। ছোট যন্ত্রপাতিতে সাধারণত ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়। পাওয়ারটিলার, সোলার পাম্প, ড্রোন, সিড ড্রিলের মতো অনেক কিছুতেই ভর্তুকি মেলে। কৃষি দপ্তরের জনপ্রিয় এই প্রকল্পের সুবিধা এ বার মিলবে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে।

Related Posts

Leave A Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *