সৈকত দাস, কলকাতা:
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেও জনসাধারণের অভূতপূর্ব স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এক মহৎ কর্মসূচির সাক্ষী থাকল বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড। ১২ই জুন, বাগুইহাটি এলাকার অরুণ নগর বারোয়ারী তলা ক্লাব প্রাঙ্গণে এক বিশেষ রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পৌরপিতা শ্রী সুশোভন মন্ডল (মাইকেল) মহাশয়।
এই রক্তদান শিবিরটি ছিল বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রজুড়ে সারামাস ব্যাপী চলা রক্তদান কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শুরু থেকেই এই কর্মসূচিতে এলাকার বাসিন্দাদের বিপুল সাড়া লক্ষ্য করা যায়। সকাল হতেই শিবির প্রাঙ্গণে মানুষের ভিড় জমে ওঠে — সকলের মনেই একটাই উদ্দেশ্য, রক্তদানের মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচানোয় অংশ নেওয়া।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল, এই রক্তদান শিবিরে আয়োজক নিজেই রক্তদানে অংশগ্রহণ করেন। পৌরপিতা শ্রী সুশোভন মন্ডল (মাইকেল) মহাশয় সকলের সামনে উদাহরণ স্থাপন করে নিজ হাতে ফর্ম পূরণ করে শয্যায় শুয়ে পড়েন রক্তদানের জন্য। তাঁর এই সদিচ্ছা ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ শুধু উপস্থিত মানুষজনকেই অনুপ্রাণিত করেনি, বরং গোটা কর্মসূচিকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়।
এইদিনের শিবির যেন রক্তদানের পাশাপাশি এক সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়। শুধু রাজনৈতিক নেতা বা সমাজসেবী নয়, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছাত্র-যুবসমাজ, মহিলারাও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এই মহৎ কর্মযজ্ঞে। জনসমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো।
এই বিশেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবরাজ চক্রবর্তী মহাশয় সহ বহু বিশিষ্টজন। তাঁদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে আরও গুরুত্ববহ করে তোলে।
পৌরপিতা মাইকেল মহাশয় জানান, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় রক্তদানের মতো সামাজিক কার্যকলাপে আমরা নিয়মিত অংশগ্রহণ করছি। এই শিবিরের মূল উদ্দেশ্য শুধুমাত্র রক্ত সংগ্রহ করা নয়, বরং সমাজের মধ্যে রক্তদানের গুরুত্ব তুলে ধরা।”
আয়োজনের প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ই সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়। ক্লাব সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা পরিশ্রম করে সফল করে তোলেন এই রক্তদান কর্মসূচি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, রক্তদাতাদের সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রক্তদানে সহায়তা করা হয়।
এক কথায়, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের এই রক্তদান শিবির হয়ে উঠল এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যেখানে রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের একাত্মতা দেখা গেল জনহিতের কাজে। মাইকেল মহাশয়ের এই মানবিক পদক্ষেপ ও নেতৃত্ব নিঃসন্দেহে আগামীদিনে আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করবে সমাজসেবায় এগিয়ে আসতে।