
হাওড়া: হাওড়ার বেলগাছিয়ার ভাগাড় সরানোর কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখানকার মাটি একেবারেই ব্যবহারযোগ্য নয়। গত রবিবার থেকে শুরু করে সোমবার সারাদিন জুড়ে ওই এলাকায় সার্ভে চলছে। আগামীকাল পুর ও নগরন্নয়ন দফতরে বৈঠক বসে ঠিক হবে—ভাগাড় থেকে সরিয়ে কোথায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

একে একে সকল উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে এই স্থানটি খতিয়ে দেখেছেন। সোমবার সয়ং কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরাদ হাকিম তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে জায়গাটি আরও খতিয়ে দেখলেন। এরপর সাংবাদিকদের জানান, “এখানে পুরো অঞ্চলটাই ভাগাড়, এখানে কোনও মাটি নেই। মানুষ অবৈধভাবে বসতি গড়ে তুলেছিল। তাই খালি জমি চিহ্নিত করে, সেখানেই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।’’
ফিরহাদবাবু আরও জানান, “কেন্দ্রীয় সরকার গ্রাম বা শহরের জন্য কোনও বরাদ্দ দিচ্ছে না। তাই রাজ্য সরকার নিজেদের তহবিল থেকেই পুরো অর্থের ব্যবস্থা করছে।”
তিনি বলেন, “অনেক বছর ধরে এই মাটি পড়ে থাকায় তা শক্ত আর ব্যবহার অযোগ্য হয়ে গেছে। আমরা যখন এই অংশ কাটছি, তখন দেখা যাচ্ছে, অনেক জায়গা আলগা হয়ে যাচ্ছে, আবার কিছু জায়গায় ভেঙেও পড়ছে। এর ফলে জমির উপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত প্রসেসিং-এর কাজ শুরু করা দরকার।”
পাশাপাশি, কেএমডিএ-র তরফে জানানো হয়েছে, বিপজ্জনক অঞ্চলগুলিতে অবিলম্বে শিট পাইলিংয়ের কাজ শুরু হবে। যেসব এলাকায় বর্জ্য জমা হয়েছে, সেগুলি ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে প্রসেসিং-এর ব্যবস্থা করা হবে। যেখানে জায়গা ফাঁকা হবে, আগামী দু’মাসের মধ্যে সেখানে প্রসেসিং ইউনিট গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম জানান, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের কাজও কাল থেকেই শুরু করবে কেএমডিএ।
তিনি আরও বলেন, “নগরন্নয়ন দফতর এবং কেএমডিএ যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে—এখানে পোর্টেবল কম্প্যাক্টর বসানোর মতো জায়গা কোথায় পাওয়া যেতে পারে, সেই নিয়ে দ্রুত কর্মসূচি নেওয়া হবে। সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। শহরের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গা চিহ্নিত করে দ্রুত প্রসেসিং এবং পুনর্বাসন দুই-ই শুরু করতে হবে।”
মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২-৩ বছর সময় লাগবে। তবে বায়ো-মাইনিং পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলবে। ফিরহাদবাবুর কথায়, “মিথেন গ্যাস মানুষের জন্য ক্ষতিকর। আমরা চাই, দ্রুত এই গ্যাস নির্গমন বন্ধ করে পুরো এলাকা পরিষ্কার করে ফেলা হোক। আমরা জাদু করতে পারি না, কিন্তু পরিকল্পনা মতো কাজ চললে কয়েক বছরের মধ্যেই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”